Monday, January 12, 2015

13 foods that are very harmful for patients with diabetes and 15 tips ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুব ক্ষতিকর যে ১৩ খাবার এবং ১৫ টিপস

13 foods that are very harmful for patients with diabetes ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুব ক্ষতিকর যে ১৩ খাবার
হৃদপিণ্ডের সুস্থতায় ঘণ্টায় ৫ মিনিট!

আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে, তবে খাবারের প্রতি খেয়াল রাখা সবচেয়ে জরুরি। যদিও এত বাছবিচার করা হলে পুষ্টির বিষয়টি চিন্তার কারণ হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের পুষ্টি পূরণের একমাত্র


লক্ষ্য হবে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার খাবার গ্রহণ করা। তাঁর মতে এমন ১৩টি খাবারের প্রতি ডায়াবেটিস রোগীদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে। কারণ এ খাবারগুলো তাদের জন্য সবচেয়ে বাজে এবং ক্ষতিকর খাবার বলে বিবেচিত হতে পারে।
১. সাদা চাল :
যত সাদা চালের ভাত খাবেন, টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের ঝুঁকি তত বাড়তে থাকবে। ২০১২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাদা চালের খাবার খেলে প্রতিদিনই ঝুঁকির মাত্র ১১ শতাংশ হারে বেড়ে যায়। কারণ এই চাল প্রক্রিয়াজাত করে সাদা করা হয়।
তাছাড়া এই খাবার চিনি মাত্রাও বাড়িয়ে দিতে পারে। এর পরিবর্তে বাদামী চালের খাবার খেতে পারেন। এতে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
২. ব্লেন্ডেড কফি :
সিরাপ, সুগার এবং ক্রিম সমৃদ্ধ ব্লেন্ডেড কফি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে বিবেচিত হতে পারে। একে স্রেফ কফি হিসেবে হয়তো খাবেন আপনি।
কিন্তু এর ব্লেন্ডেড সংস্করণে রক্তে গ্লুকোজ বাড়ানোর উপাদান রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এক কাপ ব্লেন্ডেড কফিতে ৫০০ ক্যালরি, ৯৮ গ্রাম কার্ব এবং ৯ গ্রাম ফ্যাট থাকে। এর পরিবর্তে নন-ফ্যাট সংস্করণ কফি বেছে নিন।
৩. কলা এবং তরমুজ :
সব তরতাজা ফলেই ভিটামিন ও ফাইবার রয়েছে। কিন্তু ফলে সুগার থাকে। তাই কলা, তরমুজের পুষ্টিগুণ ভালো থাকলেও এতে গ্লুকোজের পরিমাণ প্রচুর।
তাই ব্লুবেরি এবং বেরি জাতীয় ফল বেশি বেশি খান।
৪. চাইনিজ খাবার :
মুখরোচক হলেও এই খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। এতে রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার মতো যথেষ্ট উপাদান রয়েছে।
তাই এর বদলে বাড়িতে চাইনিজ খাবার বানিয়ে নিন স্বাস্থ্যকরভাবে যা আপনার রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়াবে না।
৫. পেস্ট্রি :
ডোনাট, টোস্ট বা পেস্ট্রির মতো মজার খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভয়ংকর হতে পারে। এসব প্রক্রিয়াজাত সাদা চাল থেকে তৈরি হয় যাতে উচ্চমাত্রার ফ্যাট, কার্ব এবং সোডিয়াম রয়েছে।
তাই পরনিবর্তে বাদামী চালের তৈরি কেক খান। কম চিনি রয়েছে এমন পিনাট বাটার ব্যবহার করুন।
৬. ফ্রুট স্মুথি :
এর নাম শুনলে মনে হয় খুবই স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এটি চিনিতে পরিপূর্ণ।তাই খেতে মন চাইলে বাড়িতে চিনি ছাড়া তৈরি করে উপভোগ করুন।
৭. ট্রেইল মিক্স :
সংরক্ষণ করা হয় এমন ট্রেইল মিক্সে বাদাম, শুকনো ফল এবং মিল্ক চকোলেট রয়েছে। এদের মধ্যে বাদাম ছাড়া বাকিগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিশ্চিত হুমকি।
তাই এর পরিবর্তে নিম্নমাত্রার কার্বযুক্ত সূর্যমুখীর বীচি, ওয়ালনাট, রোস্টেড পিনাট এবং আলমন্ড দিয়ে ট্রেইল মিক্স বানাতে পারেন। এই মিক্স কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ পাউরুটি দিয়ে খেতে পারেন।
৮. রিফাইন্ড সিরিয়াল :
উপাদেয় সিরিয়াল রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। তবে সিরিয়ালের ক্ষেত্রে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা একেক জনের দেহে একেকভাবে দেখা দিতে পারে। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের এড়িয়ে চলাই ভালো।
এর পরিবর্তে সবজি ও ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। ডিমের কুসুমে কোলেস্টরেল রয়েছে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৯. ফলের রস :
সকালের নাস্তায় ফলের রস খুব স্বাস্থ্যকর হলেও তা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য হুমকি। তা ছাড়া দোকানে পাওয়া যায় এমন ফলের রসে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে।
এর বদলে কম সুগার রয়েছে এমন ফলের একটি বা দুটি টুকরো খেতে পারেন।
১০. এনার্জি বার :
এনার্জি বারে আসলে থাকে চকোলেট, কার্ব এবং চিনি। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অবশ্য বর্জনীয়।
তাই ক্ষুধা লাগলে বাড়িতে তৈরি স্ন্যাক্স খেতে পারেন।
১১. পাস্তা আলফ্রেডো :
আলফ্রেডো সস ক্রিম, পারমেসান চিজ এবং বাটার থেকে তৈরি হয়। এতে রয়েছে ১ হাজার ক্যালরি, ৭৫ গ্রাম ফ্যাট এবং ১০০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। তাই বাদ দেওয়া জরুরি।
এর পরিবর্তে গমের তৈরি পাস্তা খেতে পারেন টমেটো সস দিয়ে। এতে রয়েছে ২৮০ ক্যালরি এবং ১৪ গ্রাম ফ্যাট।
১২. ফ্রেঞ্চ ফ্রাই :
এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ মারাত্মক খাবার। একটু বেশি পরিমাণ খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাবে। ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন এক এড়িয়ে চলেত বলেছে।
তাই বাড়িতে কিছু আলু ভেজে খেতে পারেন এবং একে এড়িয়ে গিয়ে অন্যান্য সবজি খাওয়াই ভালো।
১৩. চর্বিসমৃদ্ধ মাংস :
ডায়াবেটিস রোগীরা হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকেন। তাই চর্বিযুক্ত মাংস পুষ্টিকর হলেও তা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াবে ডায়াবেটিস রোগীদের। তাই বিশেষ করে রেড মিট এর মতো মাংস বাদ দিতে হবে। এতে প্রচুর পরিমাণে সম্পৃক্ত ফ্যাট রয়েছে।
এর বদলে প্রোটিনসমৃদ্ধ বিন, লেনটিস ইত্যাদি কেতে পারেন। তা ছাড়া মাছ, সামুদ্রিক খাবারও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কতিপয় টিপস


ডায়াবেটিসে ভুগছেন? তা হলে ডায়াবেটলজিস্ট এবং নিউট্রিশিয়ানিস্টদের পরামর্শ মতো এই ১৫টি ডায়াবেটিক ডায়েট টিপস মেনে চলুন। কয়েক ধাপ পেরোলেই ডায়াবেটিক তকমা লাগবে কিংবা একেবারে বর্ডারলাইনে রয়েছেন। আবার এমনটাও হতে পারে, বাড়িতে অনেকেরই ডায়াবেটিস রয়েছে। সে ক্ষেত্রেও খাওয়া-দাওয়ায় কিছু নিয়ম মানতে পারলে রোগটিকে দূরে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

মুলচন্দ মেডসিটির সঙ্গে যুক্ত ডায়াবেটলজিস্ট সঞ্জীব ভামবানির মতে, একজন ডায়াবেটিকের ডায়েটে বেশি ফাইবার যুক্ত খাবার, ক্রিম ছাড়া দুধ, বাটারমিল্ক, মরশুমি ফল আর তাজা শাক-সবজি থাকা উচিত। তবে সবটাই খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে।

সঞ্জীব আরও জানিয়েছেন, উপমহাদেশের খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট আর প্রোটিনের আনুপাতিক হার হওয়া উচিত ৬০:২০:২০। এই সমতা বজায় রেখে একজন ডায়াবেটিস রোগী রোজ ১,৫০০-১,৮০০ ক্যালোরি গ্রহণ করতে পারেন। সঙ্গে দুটো মৌসুমি ফল আর তিন রকমের সবজি থাকতেই হবে।

শুকনো ফল শরীরের পক্ষে ভালো হলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের খাবার ডায়াবেটিকদের পক্ষে ক্ষতিকর। কারণ, এর মধ্যে থাকা ফ্রুক্টোজ রক্তে শর্করার মাত্রায় পরিবর্তন আনতে পারে। শুকনো ফলের পরিবর্তে তাজা ফল বেশি করে খান। তবে শুকনো ফলের মধ্যে বাদাম খাওয়া যেতেই পারে। কেমন ডায়েট হওয়া উচিত মানুষের ডায়াবেটিস রোগীদের?

১. ১০০ মিলি জলে এক চা-চামচ মেথি সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সেই জল রোজ সকালে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

২. সকালে খালি পেটে নুন, গোলমরিচ মেশানো টমেটোর রস খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যায়।

৩. ৬টি আমন্ড সারা রাত জলে ভিজিয়ে পরের দিন খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

ইন্ডিয়ান ডায়াটেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং পরিচালক রেখা শর্মার পরামর্শ- বাড়ি বা রেস্তোরাঁ যেখানেই খান, ন্যূনতম কিছু নিয়ম মানলে উপকার আপনারই-

১. রোজ দানা শস্য, ওটস, ছোলার আটা, মিলেটের মতো হাই ফাইবার যুক্ত খাবার তালিকায় কেউ পাস্তা বা নুডলস খেতে চাইলে সঙ্গে যেন সবজি বা অঙ্কুরিত শস্য থাকে।

২. কার্বোহাইড্রেট আর প্রোটিন সম পরিমাণে থাকে। দুধ ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই দিনে দু'বার দুধ খান।

৩. ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি- যেমন, কড়াইশুঁটি, বিনস, ব্রকোলি বা পালং শাক নিয়মিত খেতে হবে। এর সঙ্গে ডাল এবং অঙ্কুরিত সবজি খেতে পারলে আরও ভালো।

৪. ডায়েটে ডাল যেন অবশ্যই থাকে। কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ অন্যান্য শস্যের তুলনায় ডাল রক্তে গ্লুকোজের উপর কম প্রভাব ফেলে। ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি রক্তে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।

৫. গুড ফ্যাট যেমন, ওমেগা ৩ এবং মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরের পক্ষে উপকারী। তিসি তেল, ক্যানোলা অয়েল, বাদামের তেল আর তেল যুক্ত মাছে এই ধরনের গুড ফ্যাট পাওয়া যায়। এগুলি ট্রান্স ফ্যাট-ফ্রি এবং এতে কোলেস্টেরলের পরিমাণও কম থাকে।

৬. ফাইবার সমৃদ্ধ ফল যেমন পেঁপে, আপেল, ন্যাসপাতি, কমলালেবু আর পেয়ারা খাওয়া উচিত। আম, কলা আর আঙুরে চিনির মাত্রা অনেক বেশি। তাই অন্য ফলের তুলনায় কম খাওয়াই ভালো। ৫ মিল প্যাটার্নে খান। অর্থাৎ অল্প অল্প করে পাঁচ বার খেলে সমস্যার সমাধান হবে।

একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে খেলে কিন্তু সুগারের মাত্রা বাড়তে পারে। তাই বারে বারে অল্প পরিমাণে খেলে হাই বা লো-ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মিলের মাঝে ধোকলা, ফল, হাই ফাইবার কুকিজ, বাটারমিল্ক, টকদই, উপমা, পোহা খাওয়া যেতেই পারে। ব্লাড সুগারের রোগীর খাবারের তালিকায় সব সময় অল্প কার্বোহাইড্রেট, বেশি ফাইবার, পরিমিত প্রোটিন, ভিটামিন আর মিনারেলস রাখতে হবে। ফ্যাটি ফুড এড়িয়ে চলাই ভালো। কী করবেন না মিষ্টি বর্জন করুন। একান্তই মিষ্টি জাতীয় কিছু খেতে চাইলে তা যেন কৃত্রিম সুইটনার দিয়ে বানানো হয়। বেশি করে পানীয় গ্রহণ করুন, তবে অতিরিক্ত মদ্যপান চলবে না। আমিষ খাওয়া উচিত? আমিষাশী হলে সামুদ্রিক মাছ আর চিকেন ডায়েটে রাখুন। রেড মিট না-খাওয়াই ভালো। কারণ, এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে। যাঁদের হাই কোলেস্টেরল আছে তাঁরাও রেড মিট ও ডিমের কুসুম খাবেন না। ডায়াবেটিকরা সব সময় পরিমিত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট আর প্রোটিন খাদ্য তালিকায় রাখবেন। কারণ, পরিকল্পনা মাফিক এবং ভারসাম্য বজায় রেখে খেলে আখেরে লাভ আপনারই।