মহাকাশ এক অজানা অধ্যায়।আর এই অজানা অধ্যায়ে আছে হাজার অজানা বস্তু, যার কিছু কিছুর সন্ধান আমরা জানি।আর কিছুর সন্ধান হয়তো এখনো জানি না।আর এ সকল বস্তুর মধ্যে কিছু বস্তু মানুষের মনে মনেক কৌতূহল সৃষ্টি করে।তার মধ্যে ধুমকেতু একটি।প্রাচীন কালে মানুষ এগুলো দেখে বিস্ময়ে হতোবাক হয়ে যেত।আর ভাবত এটি বুঝি অশুভ কিছু।যাই হোক আর কথা বাড়াবো না।আসুন আজকে জেনে নেওয়া যাক ধুমকেতুর জন্ম মৃত্যু ও পরিনতি সম্পর্কে।
ধূমকেতুর জন্মঃ
ধারণা করা হয় স্বল্পকালীন ধূমকেতুর জন্ম বামন গ্রহগুলো বা সেন্টর থেকে এবং কুইপার বেল্ট ও নেপচুনের কক্ষপথের বাইরের এলাকায় যে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন বস্তুর চাকতির মত এলাকা আছে সেখান থেকে; দীর্ঘকালীন ধূমকেতুর জন্ম ওরট মেঘ থেকে যা সৌরজগতের সবচে দূরের এলাকা এবং এখানে বরফপিণ্ডের মত অনেক বস্তু গোলাকার কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান বলে মনে করা হয়। কুইপার বেল্টে বড় গ্রহগুলোর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে বা ওরট মেঘে নিকটবর্তী কোনও নক্ষত্রের প্রভাবে কোনও বস্তু উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যের দিকে এলে নতুন ধূমকেতুর জন্ম হবে। কিন্তু ধূমকেতুর জন্মের এই প্রক্রিয়া হিসাব করে বের করা সম্ভব হয়নি। কিছু ধূমকেতুর পর্যায়কাল বড় গ্রহগুলোর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন 11P/Tempel-Swift-LINEAR ধূমকেতু ১৮৬৯ সালে আবিষ্কৃত হলেও ১৯০৮ সালের পর আর দেখা যায় নি কারণ হল বৃহস্পতি। পরে ২০০১ সালে LINEAR দ্বারা পুনরায় আবিষ্কৃত হয়।
সৌরজগত ছেড়ে চলে যাওয়াঃ
বৃহস্পতির মত বড় গ্রহগুলোর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে একটি ধূমকেতু সৌরজগত ছেড়ে চলে যেতে পারে।কারন এই রকম বড় গ্রহের মহাকর্ষীয় টান অনেক সময় সূর্যের চেয়ে বেশী হওয়ায় সেটি সূর্যের আকর্ষণ ভেদ করে মহাকাশে চলে যায়।
উদ্বায়ী পদার্থ শেষ হওয়াঃ
এই কারণে বৃহস্পতি পরিবারের ধূমকেতুর আয়ু ১০০০০ বছর বা প্রায় ১০০০ বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করা। কিন্তু দীর্ঘকালীন ধূমকেতুগুলোর ১০% মাত্র ৫০বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে পারে এবং মাত্র ১% প্রায় ২০০০ বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে পারে। এরপরে ভেতরের উদ্বায়ী পদার্থ পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়।
খণ্ড খণ্ড হয়ে যাওয়াঃ
প্রাচীন ইতিহাসবিদ ইফোরাস প্রথম খ্রি. পূর্ব ৪র্থ শতকে বলেন একটি ধূমকেতু দুইভাগে ভাগ হয়ে গেছিল। বিশাল সেপ্টেম্বর (1882 II) ধূমকেতুর নিউক্লিয়াস সূর্যের খুব কাছে গিয়ে চারটি স্বতন্ত্র নিউক্লিয়াসে ভাগ হয় যা ২৫০০ থেকে ২৯০০ সালের মধ্যে আবার ফিরে আসবে। এছাড়া ১৯৯৫ সালে Comet 73P/Schwassmann-Wachmann 3 ধূমকেতু ভেঙ্গে যেতে শুরু করে। এগুলোকে ক্রেজ সানগ্রেজার পরিবারের ধূমকেতু বলা হয়। এই ভাঙ্গন সূর্যের খুব কাছ দিয়ে গেলে সৌর জোয়ার বা বড় গ্রহগুলোর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে হতে পারে।
সংঘর্ষ ও আত্মাহুতিঃ
কোনও ধূমকেতু সূর্যে সফলভাবে পতিত হতে পারে যেমন হাওয়ার্ড-কূমন-মিশেল (1979 XI) ১৯৭৯ সালের আগস্টের শেষে অথবা গ্রহের সাথে সংঘর্ষ হতে পারে যেমন Shoemaker-Levy ধূমকেতু ১৯৯৪ সালের জুলাইতে খণ্ড খণ্ড হয়ে বৃহস্পতিতে পতিত হয়। লুইস ও ওয়াল্টার আলভারেজের মতে ৬.৫ কোটি বছর আগে কোনও ধূমকেতু বা বৃহৎ কোন উল্কাপাতের ফলে ডাইনোসরসহ অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়। অনেকের ধারণা পৃথিবীর জন্মের পর যথেষ্ট পরিমাণ পানি ধূমকেতু থেকে এসেছিল । তবে এ ব্যাপারে কোন প্রমান পাওয়া যায় নি। তথ্যসহায়িকা : উইকিপিডিয়া।
No comments:
Post a Comment