Sunday, January 18, 2015

ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য থ্রিডি মডেলিং


থ্রিডি এনিমেশন সম্পর্কে আগ্রহ বহু মানুষের। অনেকেই থ্রিডি মুভি বা কার্টুন তৈরী করতে চান, নিজের পছন্দের কোন বিষয় তুলে ধরতে চান এনিমেশনের মাধ্যমে। বাংলাদেশে বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ততটা প্রতিষ্ঠিত না যেকারনে অধিকাংশের জন্যই ভুল ধারনা তৈরী হয়। শেখার সুযোগ না থাকায় বিভ্রান্ত
হন।
এই বিভ্যান্তির বাইরে কিভাবে থ্রিডিকে কাজে লাগানো যেতে পারে, কিভাবে তাকে ফ্রিল্যান্সিং কাজে ব্যবহার করা যেতে এবিষয়ে কিছু ধারনা দেয়া হচ্ছে এখানে।
প্রথমে বাংলাদেশের প্রেক্ষিত কিছুটা জেনে নেয়া ভাল। বছর দশেক আগে হঠাত করেই বেশকিছু প্রতিষ্ঠান গজিয়ে উঠেছিল সারা দেশে।  বিদেশী কিছু প্রতিস্ঠানের নাম যোগ করে এবং সাধারনভাবে মানুষকে বিপ্লব হতে যাচ্ছে এধরনের প্রচারনা চালিয়ে বহুকোটি টাকার ব্যবসা করেছে তারা। উল্লেখ করা হয়ত প্রয়োজন নেই প্রতিস্ঠানগুলির কোনটিই টিকে নেই। যে প্রতিস্ঠানগুলি থ্রিডির কার্যক্রম ধরে রেখেছে তারাও খুব বেশি কথা বলেন না।
থ্রিডি বিষয়টি থেমে নেই। সিনেমা-নাটক বা অন্য ভিডিওতে স্পেশাল ইফেক্ট হিসেবে না হোক অন্তত বিজ্ঞাপনের কল্যানে কাজের উন্নতি হয়েছে। বেশকিছু ভাল এনিমেটর তৈরী হয়েছেন। তাদের সবাই ভাল করেছেন নিজের পরিশ্রমে, ধৈর্য্য ধরে লেগে থেকে। কাজটি খুব সহজ ছিল মনে করার কারন নেই। অনেকেই সম্ভাবনা থাকার পরও সরে গেছেন বিভিন্ন বাধা এবং অনিয়মের কারনে।
এনিমেশন সম্পর্কে ভুল ধারনাগুলি দেখা যাক।
প্রথমত, শখ করে এনিমেশন শিখব, গল্পকে এনিমেট করব এই ধারনা থাকলে একাজে হাত না দেয়াই ভাল। অনেকেই এটা করেন। ধরে নেনন কেউ দেখিয়ে দিলে দেশসেরা এনিমেশন তৈরী করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেব। হলিউড মানের কথাও উল্লেখ করেন কেউ কেউ।
বাস্তবতা হচ্ছে এনিমেশন অতন্ত জটিল একটি বিষয়। কয়েক মাসে আপনি শুধুমাত্র ধারনা পেতে পারেন, সত্যিকারের কাজের জন্য বছরের পর বছর চেষ্টা করে যেতে হবে। একে নেশা এবং পেশা হিসেবে নেয়ার মত আগ্রহ থাকলে তবেই শুরু করুন।
দ্বিতীয় ভুল, বাংলাদেশে যেহেতু বড় ধরনের থ্রিডির কাজ হয় না সেহেতু কাজ দেখার সুযোগও নেই। দল হিসেবে কাজ করার প্রবনতাও বাংলাদেশে নেই। ফলে থ্রিডি কিছু করার সময় কাউকে ভাবতে হয় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু একাই করবেন। পরিকল্পনা থেকে শুরু করে মডেলিং হয়ে ম্যাটেরিয়াল, লাইটিং, এনিমেশন, রেন্ডারিং, পোষ্ট প্রসেসিং সবকিছুই। কাজটি অসম্ভব। যিনি মডেল তৈরী করেন তিনি এনিমেট করেন না, যেনি স্পেশাল ইফেক্টনিয়ে কাজ করেন তিনি মডেল তৈরী করেন না।
দু বিষয়কে এক করে দেখলে যা হয়, সত্যিকারের ভাল কিছু করার জন্য আপনাকে একটিমাত্র অংশ বেছে নিতে হবে এবং সেখানে দক্ষতা বাড়াতে হবে।
সমস্যা হচ্ছে, আগে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, আপনি এভাবে আংশিক কাজ করে বাংলাদেশে চলতে পারেন না। আপনি যদি শুধুমাত্র মডেলিং এর দক্ষ হন আপনাকে কেউ কাজ দেবে না।  সবাই একজনের কাছে পুরো কাজ করিয়ে নিতে আগ্রহি।
এখানেই সুযোগ করে দিতে পারে ফ্রিল্যান্সিং। আপনি যদি মডেলিং এ দক্ষতা বাড়ান সেটা মাঠে মারা যাবে না। অনলাইনে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলি যদি লক্ষ করেন তাহলে দেখবেন থ্রিডি বিষয়ক সবচেয়ে বেশি কাজ থাকে মডেল তৈরীর। মুলত ক্যারেকটার মডেলিং। গেম বা কার্টুন তৈরীর জন্য কারেকটার মডেল করে নেয়া হয় ফ্রিল্যান্সিং জব সাইটগুলির মাধ্যমে। যে অর্থ পাওয়া যায় সেটাও সন্তোষজনক। প্রতি মডেলের জন্য ১০০ থেকে ৫০০ ডলার কিংবা আরো বেশি।
যদি থ্রিডি কাজে আগ্রহ থেকেই থাকে তাহলে এটা নিশ্চিত করেবলা যায়, শেখার ফল পাবেন না সেই দিন নেই। স্থানীয়ভাবে কাজ না পেলেও অনলাইনে কাজ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রয়োজন ভাল মানের কাজ করতে শেখা।
কিভাবে শিখবেন সে বিষয়ে দুকথা বলে নেয়া ভাল। কোন প্রতিস্ঠান বা ব্যক্তির ওপর নির্ভর না করে নিজেই শিখতে শুরু করুন। ইন্টারনেটে খোজ করলে বহু ইবুক পাবেন থ্রিডি এনিমেশনের, অনলাইনে বহু টিউটোরিয়াল পাবেন। অন্তত বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এগুলি ব্যক্তি বা ব্যবসা প্রতিস্ঠানের চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য।
ভাল মডেলার হিসেবে নিয়মিত কাজ করলে একসময় এনিমেশনের বাকি কাজগুলির দিকে হাত দিতে পারেন। বিদেশী কোন প্রতিস্ঠানের সাথে দীর্ঘকালিন চুক্তির সুযোগও হতে পারে। শুরুটা শুধুমাত্র মডেল তৈরীতে সীমাবদ্ধ রাখাই ভাল।++8801911023611

No comments:

Post a Comment