থ্রিডি ষ্টুডিও ম্যাক্স
বহুবিধ কাজের সফটঅয়্যার। মিডিয়া এনিমেশন, স্পেশাল ইফেক্ট, বিজ্ঞাপন চিত্র,
আর্কিটেকচারাল ভিজুয়ালাইজেশন থেকে শুরু করে থ্রিডি কার্টুন এনিমেশন সবই তৈরী করা
হয় এর সাহায্যে। স্বাভাবিকভাবেই সফটঅয়্যারটি অত্যন্ত বড় এবং জটিল।
অন্যভাবে বললে বরং বলতে
হয়, থ্রিডি বিষয়টিই জটিল। এজন্য সফটইমেজ, লাইটওয়েভ কিংবা মায়ার তুলনায় বরং থ্রিডি
ষ্টুডিও ম্যাক্স তুলনামুলক সহজ। সবাই ব্যবহার করতে পারেন বলেই বেশি জনপ্রিয়। সফটঅয়্যারকে
সহজ করার জন্য ছাড় দিতে হয়নি এমন না। আরো জটিল সফটঅয়্যারে যত ভাল ফল পাওয়া যায় তারসাথে
তুলনা করলে মানের ওপর এর প্রভাব পরেছে।
সহজতা এবং ভাল মান
দুটিকে একসাথে মেলানো কঠিন। এখানেই ভুমিকা তৃতীয় পক্ষের। তারা প্লাগইন নামে বিশেষ
সফটঅয়্যার তৈরী করেন যা ইনষ্টল করলে মুল সফটঅয়্যারের কোন কাজ আরো ভালভাবে করা যায়,
কিংবা সহজে করা যায়।
বাংলাদেশে থ্রিডি
এনিমেশনের ব্যবহার তুলনামুলক সীমিত। অন্তত চলচ্চিত্রে স্পেশাল ইফেক্ট বা
ক্যারেকটার এনিমেশনের বিচারে। ফলে জানার সুযোগও সীমিত।
থ্রিডি ষ্টুডিও
ম্যাক্সের কাজ সহজ করতে পারে, কিংবা ফলাফল উন্নত করতে পারে এমন কয়েকটি প্লাগইনের
পরিচিতি তুলে ধরা হচ্ছে এখানে।
Archvision
RPC
ম্যাক্সের কাজের মধ্যে
আর্কিটেকচারাল ভিজুয়ালাইজেশন অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। ঘরবাড়ি তৈরীর আগেই তার থ্রিডি
মডেল তৈরী করে প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হয়।
কাজ করার সময় মুল বাড়ি
নিশ্চয়ই তাদের নকশা অনুযায়ী করবেন। সেইসাথে রাস্তাঘাট, সেখানে মানুষ-গাড়ি, গাছপালা
ইত্যাদি তৈরী করার কি সম্ভব।
একাজে সহায়তা করতে পারে
আরপিসি। মুলত এটা মডেল লাইব্রেরী। তাদের তৈরী সব ধরনের অবজেক্টের মডেল রয়েছে, একে
প্লাগইন এর মাধ্যমে ইমপোর্ট করে ব্যবহার করা।
কোন হাউজিং কোম্পানীর
বিজ্ঞাপনে রেলিং এর সাথে গাছ থেকে শুরু করে অন্যান্য গাছপালা, পথচারি, গাড়ি
ইত্যাদি দেখে থাকলে জানবেন সেটা আরপিসি ব্যবহার করে তৈরী।
v-Ray
একসময় থ্রিডি ষ্টুডিও
ম্যাক্স সম্পর্কে প্রচলিত কথা ছিল, এর লাইটিং ব্যবস্থা উন্নত না। চকচকে ধাতব
পদার্থ, কাচ থেকে শুরু করে সুর্য়ের আলো বা অন্য আলো ঠিকভাবে তুলে ধরতে পারে না।
বর্তমানে যদিও এডভান্সড লাইটিং ফিচার যোগ করা হয়েছে। এটা করার আগেই ভি-রে নামে
একটি প্লাগইন বাজারে আসে এবং সাথেসাথেই জনপ্রিয়তা লাভ করে।
এর কাজ মুলত দৃশ্যকে
আলোকিত করা। কোন থ্রিডি কাজে ঘরবাড়ি, গাছপালা, পুকুর-নদী ইত্যাদি আলোছাড়ায় খেলা
যদি দেখে থাকেন তাহলে অবশ্যই ভি-রে এর ব্যবহার দেখেছেন। উদাহরনের ছবিটি দেখে ধারনা
পেতে পারেন এর ব্যবহারে কি ফল পাওয়া যেতে পারে। অনেক ম্যাক্স ব্যবহারকারী ভি-রে
বাদ দিয়ে কাজের কথা ভাবেনও না।
Di-O-Matic
Character Pack
থ্রিডি এনিমেটেড মুভি সম্পর্কে
যদি আগ্রহ থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই ডাই-ও-ম্যাটিক এর ব্যবহার দেখেছেন। চলচ্চিত্র,
টিভি থেকে শুরু করে সব যায়গায় এটা ব্যবহার করা হয়। ডাই-ও-ম্যাটিক বললে মুলত কয়েকটি
প্লাগইন এর সমষ্টি বুঝায়। যেমন Voice-O-Matic, Facial Studio, Morph-O-Matic, Morph Toolkit, Hercules,
Cluster-O-Matic ইত্যাদি।
উদাহরন হিসেবে
ভয়েস-ও-ম্যাটিক এর কথা বিবেচনায় আনা যাক। আপনি হয়ত বাইপেড কিংবা বোন ব্যবহার করে
কোন চরিত্রকে হাটাচলা, দৌড়ানো ইত্যাদি সব কাজ করাতে পারেন। সমস্যা হয়ে দাড়ায় তাকে
দিয়ে কথা বলানো, কথার সাথে ঠোট মেলানো। থ্রিডি ষ্টুডিও ম্যাক্স এর Morph ব্যবহার করে চেষ্টা করতে পারেন, যদি করেই থাকেন
তাহলে জানেন কতটা জটিল সেই কাজ।
ভয়েস-ও-ম্যাটিক এই
কাজকে সহজ করে দিতে পারে। বিভিন্ন ধরনের উচ্চারনের জন্য (মুলত ইংরেজি ভাওয়েল)
মুখভঙ্গি তৈরী করে দেবেন। এরপর সফটঅয়্যার নিজেই শব্দে সাথে মিল রেখে ঠোট নাড়াবে।
রেকর্ড করা শব্দই হোক আর ইংরেজিতে টাইপ করা লেখাই হোক।
ভয়েস-ও-ম্যাটিক এর মায়া
ভার্শনও পাওয়া যায়।
একইভাবে ফেসিয়াল
ষ্টুডিও ব্যবহার করে Sphere তৈরীর মত সহজে যে কোন
ধরনের মুখমন্ডল তৈরী করতে পারেন। মুখমন্ডল, চিবুক, ঠোট, নাক, কান, দাত সবকিছুই
ইচ্ছেমত তৈরী করে নিতে পারেন প্যারামিটার পরিবর্তন করে। এমনকি কতটা পুরুষ, কতটা
মহিলা, বয়স, কিংবা এলিয়েন যেকোন কিছুই করে নিতে পারেন মুহুর্তে।
থ্রিডি ষ্টুডিও ম্যাক্স
ব্যবহার করে কিছু করা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ। সেখানে কোন প্লাগইন যদি কাজ সহজ করে
কিংবা সময় বাচায় তাহলে সেগুলি হাতের কাছে রাখাই ভাল।
কোথায় পাবেন ? ইন্টারনেটের
যুগে এটা হয়ত গুরুত্বপুর্ন প্রশ্ন না।
No comments:
Post a Comment